পর্ব:-০৩
এম.কে.জাকির হোসাইন বিপ্লবী
চার
আল্লামা সাঈদীর বৈবাহিক জীবন ও সন্তান :-
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিরোজপুর জেলার শংকরপাশা ইউনিয়নের বাদুড়া গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মরহুম মুন্সি মোঃ ইউনুসের তৃতীয় কন্যা বেগম সালেহা সাঈদীর সাথে ১৯৬০সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ওনারা চার সন্তানের জনক।সন্তান চারজন হলেন:-
১.মরহুম মাওলানা রাফীক বিন সাঈদী। তিনি ১৯৬৬ সালের ১৩ এপ্রিল জন্ম গ্রহন করেন। ২.শামিম সাঈদী। ৩.মাসুদ সাঈদী ৪.নাসিম সাঈদী।
মরহুম মাওলানা রাফীক বিন সাঈদী পরিবারের বড় ও নাসিম সাঈদী পরিবারের ছোট সন্তান।
আমি আমার সাধারণ জ্ঞান থেকে সঠিক তথ্যের আলোকে ওনার আদর্শবান সন্তানদের বিষয়ে কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করছি।কবির ভাষায় বলতে চাই,
আদর্শবান পিতার আদর্শবান সন্তান
লিখে যাই তাদের কিছু গুণ ও গান,
কথায় আছে, বাবার ইতিহাস বলতে গেলে সন্তানের ইতিহাস কিছুটা প্রকাশ পায়।কারণ আদর্শবান পিতার ঘরে কেমন সন্তান হয়েছে সেটা অবশ্যই জাতির জানার দরকার।তাই শুরু করছি সন্তানদের পরিচয় :-
১.মরহুম মাওলানা রাফীক বিন সাঈদী:-
মাওলানা রাফীক বিন সাঈদী ছিলেন এদেশের একটি ফুটন্ত ফুল।তরুণ প্রজন্মের গৌরব।পিতার আদর্শে জীবনকে গঠন করে পিতার মতোই কুরআন প্রচারের কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন।জাতির সামনে ফুটে উঠেছিল রাফিক বিন সাঈদীর মাঝে আল্লামা সাঈদীর প্রতিচ্ছবি।যার কারনে রাফিক বিন সাঈদীকে এদেশের দ্বিতীয় সাঈদী বলা হতো।অল্প সময়ের মধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাফিক বিন সাঈদি নামক ফুলের সৌরভ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে, তবে সেটা বেশিদিন স্থায়িত্ব অর্জন করতে পারেনি।যেমন কবির ভাষায় বলতে চাই
কিছু ফুল রয়ে যায় ফুলের বাগানে
ফুল প্রেমিকরা সে ফুল ছুয়ে নাহি দেখে,
কিছু ফুল ঝরে যায় সৌরভ ছড়িয়ে
ফুল প্রেমিকরা তাহার জন্য ভাসে চোখের জ্বলে।
এমন একটি ফুল ছিলো রাফিক বিন সাঈদী
সৌরভ ছড়িয়ে গিয়েছে চলে আজও কাঁদে জাতি।
উক্ত কবিতার ভাবধারায় প্রমাণিত রাফিক বিন সাঈদী দ্বীন প্রতিষ্ঠার ফুল ছিলেন, যা বেশিদিন সৌরভ ছড়াতে পারেনি।রাফিক বিন সাঈদীর ত্যাগও দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্ঠা ও পিতার প্রতি অগভীর ভালোবাসা আমাকে লিখতে বাধ্য করেছে যে,আল্লামা সাঈদীর ইতিহাসে ওনার সংক্ষিপ্ত জীবনের কথা না লিখলে একজন লেখক হিসেবে নিজেকে প্রশ্নবিদ্ধ মনে হবে।কারন ওনার মৃত্যুটা রহস্যময়। তাই ওনার সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করছি,,
রাফিক বিন সাঈদি ১৯৬৬ সালের ১৩ এপ্রিল জন্ম গ্রহন করেন।ওনি তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা থেকে ১৯৯০ সালে কামিল পাশ করেন। বাংলাদেশে মাদরাসা শিক্ষা সমাপ্ত করার পর ওনি সৌদি আরবের উম্মুল ক্বুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষা ও সাহিত্যে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রী অর্জন করেন। পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ওনি আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বাতিলের মোকাবিলায় উত্তপ্ত ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। অপূর্ব কন্ঠের অধিকারী রাফীক বিন সাঈদী কোরআনের একজন মুফাসসির হিসেবে দেশে বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছিলেন। আল্লাহ তায়ালার মেহেরবানীতে রাফীক বিন সাঈদী ওনার জীবনের ৪৬ বছরের মধ্যে ১৯টি বছরেই কোরআনের খেদমতে কাটিয়েছিলেন।
সরকারের বানানো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পিতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রতি করা জুলুম অত্যাচার মিথ্যাচার সইতে না পেরে ২০১২ সালের ১৩ জুন ট্রাইব্যুনালে পিতার মামলা চলাবস্থায় কোর্ট রুমেই ওনার হার্ট এটাক হয়। ট্রাইব্যুনাল থেকে শিঘ্রই ওনাকে ওনার ছোট ভাই মাসুদ সাঈদী শাহবাগস্থ ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকগণের শত চেষ্টা ব্যার্থ করে দিয়ে দুপুর ২:৩০ মিনিটে মাত্র ৪৬ বছর বয়সে রাফীক বিন সাঈদী সকলকে কাঁদিয়ে মহান মালিকের ডাকে সারা দিয়ে চিরদিনের জন্য না ফেরার দেশে চলে যান। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
পেশাগত জীবনে রাফীক বিন সাঈদী ছিলেন গ্লোবাল প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং নেটওয়ার্ক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও আবে জমজম প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক। তিনি অসংখ্য সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথেও সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি পিরোজপুর শহরে প্রায় ৫ বিঘা জমির উপর একটি কলেজ, একটি হাসপাতাল, একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল, একটি দাখিল মাদরাসা ও একটি ইয়াতিমখানার সমন্বয়ে গঠিত ‘আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। ইন্তেকালের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত তিনি দিগন্ত টেলিভিশনের ‘সরল পথ’ অনুষ্ঠানের পরিচালক ও উপস্থাপক ছিলেন।
বিবাহিত জীবনে রাফীক বিন সাঈদী ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র দৈনিক সংগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা প্রকাশক ও বাংলাদেশ পাবলিকেশন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মরহুম সাইয়্যেদ এম. এইচ হুমায়ুনের জামাতা এবং পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর, মক্কা আল মুকাররমার এসি প্লান্টের ডিজাইনারও মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিকায়নের রুপকার, ইসলামী ফাউন্ডেশন লন্ডনের ডাইরেক্টর জেনারেল, বহুগ্রস্থ প্রণেতা মরহুম খুররম জাহ মুরাদের ভাগ্নী জামাতা। রাফীক বিন সাঈদী রাহিমাহুল্লাহ দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক।
ওনাদের দ্বিতীয় সন্তান শামীম সাঈদী:-
শামীম সাঈদী ১৯৬৯ সালের ১০ এপ্রিল জন্মগ্রহন করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেছেন। পেশাগত জীবনে শামীম সাঈদী মাহদী ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান। ওনি বহুসংখ্যক সামাজিত প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত আছেন। বর্তমানে ওনি খুলনার দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার ট্রাষ্ট ও গভর্নিং বোর্ডের সভাপতি ও আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের দ্বাযিত্ব পালন করছেন। শামীম সাঈদী পিরোজপুর ১ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের সংসদ সদস্য প্রার্থী ছিলেন।
বিবাহিত জীবনে শামীম সাঈদী ঐতিহ্যবাহী পাবনা ষ্টোর, প্রিন্স রেস্তোরা, জাফরান রেস্তোরা ও ক্রিষ্টাল গার্ডেন এর মালিক ঢাকার প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী আলহাজ্ব কাজী লিয়াকত হোসেনের জামাতা। শামীম সাঈদী দুই পুত্র ও এক কন্যাসন্তানের জনক।
ওনাদের তৃতীয় সন্তান মাসুদ সাঈদী:-
মাসুদ সাঈদী ১৯৭২ সালের ২৩ নভেম্বর জন্মগ্রহন করেন। শিক্ষা জীবনে ওনি আমেরিকার লা গর্ডিয়া থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেছেন। পেশায় ব্যাবসায়ী, মাসুদ সাঈদী একাধারে জননেতা ও সমাজসেবক। ওনি ২০১৪-২০১৯ মেয়াদে জনগনের প্রত্যক্ষ ভোটে পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ওনি খুলনার দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া কামিল
মাদরাসার ট্রাষ্ট ও গভর্নিং বডির সদস্য ও আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যানের দ্বাযিত্ব পালন করছেন। এছাড়াও ওনি মদীনাতুল উলুম দাখিল মাদরাসার তত্বাবধায়কের দ্বায়িত্বও পালন করছেন।
মাসুদ সাঈদী বিবাহিত জীবনে বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ও জামেয়া কাসেমিয়া নরসিংদীর প্রতিষ্ঠাতা, সেন্ট্রাল শরীয়াহ কাউন্সিল অফ ইসলামিক ব্যাংকস অফ বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান, মুসলিম বিশ্বের স্বনামধন্য বুদ্ধিবৃত্তিক ও দাতব্য সংগঠন রাবেতা আলম আল-ইসলামীর সর্বোচ্চ বোর্ডের সদস্য, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন সাইয়্যেদ কামালুদ্দিন আবদুল্লাহ জাফরীর জামাতা। মাসুদ সাঈদী এক পুত্র সন্তানের জনক।
ওনাদের চতুর্থ সন্তান নাসীম সাঈদী:-
নাসিম সাঈদী ১৯৭৫ সালে ২০ নভেম্বর জন্মগ্রহন করেন। সমাজসেবক ও ব্যাবসায়ী নাসীম সাঈদী ইংল্যান্ডে ইংরেজী সাহিত্যের উপর পড়াশুনা করেছেন। নাসীম সাঈদী পিরোজপুরের বেগম সালেহা সাঈদী হিফজ ও ইয়াতিমখানার সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করছেন।
বিবাহিত জীবনে নাসীম সাঈদী লক্ষীপুরের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম, লক্ষীপুর ১ আসনের সাবেক এমপি মাষ্টার শফিকুল্লাহর নাতনী ও মোঃ মোশাররফ হোসেনের মেয়ে জামাতা। নাসীম সাঈদী দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক।
আদর্শিত পিতার আদর্শিত সন্তানদের পরিচয়েই স্পষ্ট প্রমানিত আল্লামা সাঈদীর উপর এদেশের জালিমরা জুলুম করেছে।কারণ ওনি নিরপরাধ ছিলেন।
তথ্য সূত্রে:- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং মিডিয়া।
H B Tv news.প্রধান উপদেষ্ঠা কাজী আবু মুসা H B Tv news.প্রধান উপদেষ্ঠা কাজী আবু মুসা সিদ্দিকী, হাফেজ নুরে আলম সিদ্দিকী,মাও: জুনাইদ আল হাবিব। প্রধান সম্পাদক :- কবি ও গবেষক - মাহমুদুল হাসান নিজামী, সম্পাদক ও প্রকাশক:- এম.কে.জাকির হোসাইন বিপ্লবী, সম্পাদক :- আহমেদ হোসাইন ছানু,সাধারণ সম্পাদক:- মোহাম্মদ আলী মোড়ল,মোছাঃ লিপি আক্তার, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক :-আহসান হাবীব ইমরুজ,আইন বিষয়ক সম্পাদক :-মোঃ আমিনুল ইসলাম,ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক :- ডাঃ মাও:- শাহ্ কামাল,সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক :- কবি মিযানুর রহমান,গাজী লতা ইসলাম,প্রচার সম্পাদক:- রাহাদুল ইসলাম রাহাদ ও মনির খান, মিডিয়া সম্পাদক :-মোঃ সাইফুল্লাহ মিয়া,মোঃ আবু সাঈদ,যোগাযোগ:-হোয়াটসপ 01920125278/01715-907221.. প্রধান কার্যালয়:- মতিঝিল,তোফখানা রোড, সেগুন বাগিচা,হাইস্কুলের বিপরীত পার্শ্বে,স্বরলিপি পাবলিকেশন।www.hbtvbd.com/[email protected]