শিরোনাম:-**ড.মোহাম্মদ ইউনুস: রাষ্ট্র পরিচালনায় একজন যোগ্য ব্যক্তি**

এম.কে.জাকির হোসাইন বিপ্লবী
সম্পাদক ও প্রকাশক

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের ইতিহাসে ড. মুহাম্মদ ইউনুস একটি উজ্জ্বল নাম। তিনি ক্ষুদ্রঋণ ধারণার জনক এবং গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। তার নেতৃত্বে ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য বিমোচনের একটি কার্যকর মডেল হিসেবে স্বীকৃত। ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জন তাঁর কার্যক্রমের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির উদাহরণ। তবে প্রশ্ন ওঠে, ড. ইউনুস কি রাষ্ট্র পরিচালনায় যোগ্য একজন ব্যক্তি?

ড. ইউনুসের নেতৃত্বগুণ এবং নীতিবোধ রাষ্ট্র পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি দুর্নীতি থেকে মুক্ত, স্বচ্ছ এবং মানবিক নেতৃত্বের প্রতীক। তিনি দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ধারণা জনপ্রিয় করেছেন এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তাঁর এই অভিজ্ঞতা অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়ন এবং সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশেষভাবে কার্যকর হতে পারে।

রাষ্ট্র পরিচালনায় দক্ষতার জন্য যে বৈশিষ্ট্যগুলো প্রয়োজন, তার বেশিরভাগই ড. ইউনুসের মধ্যে বিদ্যমান। উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে একজন যোগ্য রাষ্ট্রনায়কের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। তিনি প্রমাণ করেছেন যে সৃজনশীল উদ্যোগ এবং নৈতিক দায়িত্ববোধের সমন্বয়ে কীভাবে আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন সম্ভব।

তবে, শুধুমাত্র একজন দক্ষ উদ্যোক্তা বা মানবতাবাদী হওয়া রাষ্ট্র পরিচালনায় যথেষ্ট নয়। রাষ্ট্র পরিচালনা আরও জটিল এবং বহুমাত্রিক। এখানে কূটনৈতিক দক্ষতা, আইনপ্রণয়ন এবং নীতি প্রণয়নে অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ। ড. ইউনুস যদি রাজনীতির মূলধারায় প্রবেশ করেন এবং এই দক্ষতাগুলো অর্জন করেন, তাহলে তিনি বাংলাদেশকে একটি সুশাসনমুখী এবং উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারেন।

বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সুশাসনের অভাব এবং নৈতিকতার সংকট প্রকট। এই পরিস্থিতিতে ড. ইউনুসের মতো একজন প্রগতিশীল এবং নৈতিক নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাঁর নেতৃত্বে দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সম্ভব।

ড. ইউনুস রাষ্ট্র পরিচালনায় একজন যোগ্য ব্যক্তি হতে পারেন, তবে এর জন্য তাঁর নিজস্ব অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। তাঁর নেতৃত্বে একটি সমৃদ্ধ, সুশাসিত এবং নৈতিক বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব।

**-সম্পাদকীয় বিভাগ**